Friday, August 15, 2008

"ইন্দি-পেন্ডেন্-স্ "

স্বাধীনদেশের রক্ষণশীল, একান্নবর্তী পরিবারের কন্যা সন্তানের স্বাধীনতা ছোটথেকেই ছেঁটেকেটে রাখা হয়। আমার বেলাতেও তার ব্যাতিক্রম হয়নি । ছাঁটা-কাটা স্বাধীনতার ঘেরাটোপে, শুল্ক বসানো সাজপোশাক, কর চাপানো বন্ধুনির্বাচন, আর খাজনা আরোপিত বাইরে বেরোনো মেনে নিয়ে কি ভাগ্যি একটা স্নাতকোত্তর ডিগ্রিলাভ করে,যথাসময়ে গুরুজনদের নির্বাচিত পাত্রের গলায় মাল্যদান করে দস্তুরমতো বিদেশগমন এবং বেশ কিছুদিন পরে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করি। এই ভাবে দেখতে দেখতে প্রায় উনিশটা বছর পার করেছি,একমাত্র পুত্রবধূ,স্ত্রী,মা এবং শিক্ষিকা রূপে। কিন্তু স্বাধীন হতে পারিনি। লেখিকা হিসাবে পরিচিতি পাই-- এরূপ ইচ্ছা মনের মধ্যে বহুদিন ঘুমিয়ে ছিল। বিজ্ঞানের ছাত্রী হয়েও বাংলা সাহিত্যচর্চার স্বাদ থেকে নিজেকে বঞ্চিত করিনি। স্বাধীনভাবে লিখতে পারি মনের কথা ,প্রকাশ করতে পারি বাংলাভাষায়। কিন্তু সকলের উদ্দেশ্যে এই কথা,এই ভাষা ছড়িয়ে দেবার স্বাধীনতা নেই। বুঝলাম "এ কেবল দিনে রাত্রে ,জল ঢেলে ফুটা পাত্রে ,বৃথা চেষ্টা তৃষ্ণা মেটাবার।" হাল ছাড়লাম না। অবশেষে ইন্টারনেটের গোলকধাঁধায় হারিয়ে গেলাম ফাগুনের আগুনে রেঙে ওঠা এক পড়ন্ত বিকেলবেলায়। দিনটা ছিল ২৩ শে ফেব্রুয়ারি,শনিবার,২০০৮ .... আমার যাত্রা হোল শুরু।

খুলে ফেললাম নিজস্ব 'ব্লগ' ।....অসাধারণ আইডিয়া! অভিনব টেকনোলজি, স্বাধীনভাবে যা খুশী লেখো সেখানে। অব্যক্ত মনের কথা, অপ্রকাশিত প্রাণের ব্যাথা, বাংলা হরফে টাইপ করা আর কোনো বাধাই নয়। ইউসারফ্রেন্ডলি ফন্টের দৌলতে খটাখট টাইপ করে,আপলোড করে দাও ব্লগে। সারা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের লোক পড়ছে আমার লেখা,মন্তব্য পাঠাচ্ছে ই-মেলে--এই বা কি কম কথা। আমি আজ স্বাধীন লেখিকা হলাম। এতদিনে প্রকৃত স্বাধীনতার স্বাদ পেলাম। যেখানে আমার হারিয়ে যেতে নেই মানা। যেখানে আমার লেখনীর ঝর্ণাকলমের মুক্ত হরফ, স্বাধীন ভাষার ছন্দে উদ্দাম নৃত্যের তালে তালে স্বাধীনভাবে সৃষ্টি করে চলেছে অবিরত। সব শাসনের লক্ষণরেখাকে মুছে দিয়ে স্বাধীন আমিই আমার একমাত্র পৃষ্ঠপোষক, সম্পাদক, প্রকাশক এবং সর্বোপরি মুদ্রাকর।

"সোনার তরীর রূপোর পালে ব্লগের হাওয়া লাগলো বলে, ঘুচল শিকল মুক্ত পাখির ফুটল বুলি যন্ত্রজালে।"

Wednesday, August 13, 2008

"ইন্দি-পেন্ডেন্-স্ "

স্বাধীনদেশের রক্ষণশীল, একান্নবর্তী পরিবারের কন্যা সন্তানের স্বাধীনতা ছোটথেকেই ছেঁটেকেটে রাখা হয়। আমার বেলাতেও তার ব্যাতিক্রম হয়নি । ছাঁটা-কাটা স্বাধীনতার ঘেরাটোপে', শুল্ক বসানো সাজপোশাক, কর চাপানো বন্ধুনির্বাচন, আর খাজনা আরোপিত বাইরে বেরোনো মেনে নিয়ে কি ভাগ্যি একটা স্নাতকোত্তর ডিগ্রিলাভ করে,যথাসময়ে গুরুজনদের নির্বাচিত পাত্রের গলায় মাল্যদান করে দস্তুরমতো বিদেশগমন এবং বেশ কিছুদিন পরে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করি। এই ভাবে দেখতে দেখতে প্রায় উনিশটা বছর পার করেছি,একমাত্র পুত্রবধূ,স্ত্রী,মা এবং শিক্ষিকা রূপে। কিন্তু স্বাধীন হতে পারিনি। লেখিকা হিসাবে পরিচিতি পাই-- এরূপ ইচ্ছা মনের মধ্যে বহুদিন ঘুমিয়ে ছিল। বিজ্ঞানের ছাত্রী হয়েও বাংলা সাহিত্যচর্চারস্বাদ থেকে নিজেকে বঞ্চিত করিনি। স্বাধীনভাবে লিখতে পারি মনের কথা ,প্রকাশ করতে পারি বাংলাভাষায়। কিন্তু সকলের উদ্দেশ্যে এই কথা,এই ভাষা ছড়িয়ে দেবার স্বাধীনতা নেই। বড় বেশী রাজনৈতিক মারপ্যাঁচ, বড্ড অন্যের ওপর নির্ভরতা এদেশে। বহু পত্র-পত্রিকায় পাঠালাম এতকাল ধরে কিন্তু সেই স্কুল ম্যাগাজিন,বিয়ের পদ্য ,ভাষণ, ছোট পুজোবার্ষিকী এসবের মধ্যেই আমার রচনা সীমাবদ্ধ রইল । বুঝলাম "এ কেবল দিনে রাত্রে ,জল ঢেলে ফুটা পাত্রে ,বৃথা চেষ্টা তৃষ্ণা মেটাবার।" হাল ছাড়লাম না। অবশেষে ইন্টারনেটের গোলকধাঁধায় হারিয়ে গেলাম ফাগুনের আগুনে রেঙে ওঠা এক পড়ন্ত বিকেলবেলায়। দিনটা ছিল ২৩ শে ফেব্রুয়ারি,শনিবার,২০০৮ .... আমার যাত্রা হোল শুরু।

খুলে ফেললাম নিজস্ব 'ব্লগ' ।....অসাধারণ আইডিয়া! অভিনব টেকনোলজি, স্বাধীনভাবে যা খুশী লেখো সেখানে। অব্যক্ত মনের কথা, অপ্রকাশিত প্রাণের ব্যাথা, বাংলা হরফে টাইপ করা আর কোনো বাধাই নয়। ইউসারফ্রেন্ডলি ফন্টের দৌলতে খটাখট টাইপ করে,আপলোড করে দাও ব্লগে। সারা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের লোক পড়ছে আমার লেখা,মন্তব্য পাঠাচ্ছে ই-মেলে--এই বা কি কম কথা। আমি আজ স্বাধীন লেখিকা হলাম। এতদিনে প্রকৃত স্বাধীনতার স্বাদ পেলাম। যেখানে আমার হারিয়ে যেতে নেই মানা। যেখানে আমার লেখনীর ঝর্ণাকলমের মুক্ত হরফ, স্বাধীন ভাষার ছন্দে উদ্দাম নৃত্যের তালে তালে স্বাধীনভাবে সৃষ্টি করে চলেছে অবিরত। সব শাসনের লক্ষণরেখাকে মুছে দিয়ে স্বাধীন আমিই আমার একমাত্র পৃষ্ঠপোষক, সম্পাদক, প্রকাশক এবং সর্বোপরি মুদ্রাকর।

"সোনার তরীর রূপোর পালে ব্লগের হাওয়া লাগলো বলে, ঘুচল শিকল মুক্ত পাখির ফুটল বুলি যন্ত্রজালে।"

Thursday, August 7, 2008

A key e-ব্যাঙ্ কিং or g-বং যুদ্ধ ?

ইউনাইটেড স্টেটস্ এর অবতার যখন Y -2K'র ছড়ি ঘুরিয়ে সারাবিশ্বের দরবারে যাদু সৃষ্টি করল তখন আমাদের দেশেও তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক ঢেউ এসে আছড়ে পড়েছিল প্রথমে বিদেশি ব্যাঙ্কিং পরিষেবায় ও কিছু পরে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কম্পিউটার স্ক্রীনে।তখন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির ষ্টাফ, অফিসার কেউই সানন্দে whole heartedly মেনে নিতে পারেন নি এই অট্যোমেশন | নতুন প্রজন্ম মহা আনন্দে এই কম্পিউটারাইজেশনকে welcome জানাল কিন্তু বয়স্করা এই নব্য প্রযুক্তির সংযোজনে Male-Menopause এর স্বীকার হলেন । স্ত্রী-পুরুষ নির্বিশেষে থমকে দাঁড়িয়ে গেলেন। কিং-কর্ত্যব্য-বিমূঢ় হয়ে সারাদিন অফিসে 'আসি যাই মাইনে পাই' এই মানসিকতা নিয়ে ম্লান বদনে গণক মেশিনের দিকে করুণপানে তাকিয়ে দিন যাপন করতে লাগলেন। একদিকে চাকুরীরক্ষার দায় অন্যদিকে কম্পিউটারে প্রশিক্ষণের আবশিক্যতা এই দুয়ের টানাপোড়নে কালাতিবাহিত করতে লাগলেন.. "একি জ্বালারে বাবা".... "আমাদের কি এই বয়সে কম্পিউটার না শিখলেই নয়"? "না" জানালেন ম্যানেজমেন্ট |" ভালো তো , না পারেন তো VRS নিয়ে বাড়িতে বসে পড়ুন , আপনারও শান্তি , আমাদেরও লাভ | অগত্যা, "এই বেশ ভাল" এই সত্যকে মেনে নিয়ে অনেকে স্বেচ্ছাবসর নিলেন , সঙ্গে থোক টাকা | কিছু ষ্টাফ দাঁতে দাঁত চেপে নতুন প্রযুক্তিতে "কাটাইনু সারাদিন সুখ পরিহরি, অনিদ্রায় অনাহারে সঁপিকায় মন" এই ভাবে দক্ষতা অর্জন করলেন | এবং দন্ত রুচি-কৌমুদী বিকশিত করে ,কাউণ্টারে কম্পিউটার স্ক্রীনের বিপরীতে বসে ঠান্ডা-যুদ্ধ চালিয়ে গেলেন | কিছু বছর পরেও সেই ট্র্যাডিশন এখনো চলছে .....

কলকাতার কোনো এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কথোপকথনের ক্যানভাস থেকে একটি মজার চিত্র তুলে ধরলাম :
[diclaimer: কারুকে আঘাত করার উদ্দেশ্যে নয় , just একটু মজা করার জন্য ]

সুমন: "সুপর্ণাদি ,ঐ ভদ্রলোককে FD certificate টা প্রিন্ট করে দিন না ,উনি দু দিন ঘুরে গেছেন |"
সুপর্ণাদি: "এই সুমনা তুমি কি মেশিনটা ছাড়বে? আমি তবে প্রিন্টাউট নিয়ে নি "
সুমনা: "আরে দাঁড়াও সুপর্ণাদি আমার মেশিন hang করে গেছে "
সুপর্ণ :আরে বাবা কতবার তো বলেছি, CAD মারো | মেরেছো?
সুমনা:এই যাঃ সব গেল! সারাদিন এত খেটে data গুলো entry করলাম! save করতে ভুলে গেছি। কি হবে এখন ?
সুপর্ণ: দেখি আপনার user-id,password টা দিন দেখি
সুপর্ণাদি : এই সুমন? দেখোনা ভাই, মিসেস বোসের একটা pay-order আছে
সুপর্ণ : দাঁড়ান তো আগে ঠিকমত logout করে বেরোই
জনৈক customer: দাদা আজও আপনাদের মেশিন খারাপ আমিএর আগে দু দিন এসে এই একই অবস্থা দেখে গেছি। আজও আমার passbook updation হবেনা? কত গুলো ECS হোল কিনা দেখার ছিল ....
সুপর্ণ: দাদা একটু বসুন না.. চা-কফি কিছু ? এই বিমল এনাকে চা দে | দাদা , দুধ চা ? না লেবু চা ? চিনি ছাড়া না চিনি দিয়ে ?
বিরক্ত customer:আরে মশাই রাখুন তো আপনার চা আমার কাজটাই হোলনা, ECSটা জেনে নিলে....আমার একটা payment ছিল।
সুমনা : এই বারে হয়েছে, যাক বাব্বা! বাঁচলাম। এই বিমল? আমাকে চা দিলি ,বিস্কুট দিলিনা ?
সুপর্ণাদি : তোমার শাড়ির রং টা খুব suit করেছে তোমার complexion এর সাথে |
সুমনা : এই দেখ সুপর্ণাদি আবার log-in করতে পারছিনা | কি যে হচ্ছে আজ!
সুপর্ণাদি : দাড়াও আমার printer এ cartridge শেষ , printout নিতে গিয়ে মাঝপথে error দিল | ওফ্! আর পারিনা ;
সুমন : হ্যাঁ, বলুন দাদা, আপনার জন্য কি করতে পারি ;
জনৈক customer : কি আর করবেন দাদা ? এই computerisation এক আপদ হোল দেখছি ... রোজ রোজ মেশিন খারাপ, প্রিন্টারে কালি নেই, নেট-ওয়ার্কে গন্ডগোল...
সুপর্ণাদি : হচ্ছে না সুমন, তুমি এস এখানে একবার please... একটু দেখোনা...
সুমন : আরে আগের প্রিন্টটা ক্যানসেল করেন নি এখন print করতে শুরু করলে মেশিন আবার hang করে যাবে।
সুমনা : সুপর্ণদা, আমার ফাইলটা আর edit করা যাচ্ছে না , read only তে চলে গেছে। কি হবে?
সুপর্ণ : ফাইলে গিয়ে 'save as' করে re-name করে আবার save করো।
সুপর্ণাদি : এই সুমন ছাড়ো না machine , বিমল কে cartridge লাগাতে বল |
সুমন : আগে reset করুন তারপরে print-option এ যান ...
সুমনা : এই যাঃ সব উড়ে গেল ...
সুপর্ণ :সুমনা, নাহলে machine টা shut-down করো,করে আবার restartকরো |